সেই সাদাসিধা মানুষটা আজ আগুনমুখী লৌহ মানবী শেখ হাসিনা
আগুনমুখী লৌহ মানবী শেখ হাসিনা
মাঝে বিরক্ত লাগে হাসিও পায়, যখন মুড়ি মুড়কির একদর দেখি! শেখ হাসিনার লগে খালেদা জিয়ার তুলনা!! কই যাইতাম। শুরু করছিলো নরজুল স্যার। একাত্তর নিয়া টান দিয়া বুঝাইতে চাইছে হাসিনা-খালেদা পাকিস্তানী বন্দিদশায় নাকি সমান নির্যাতিত! শেখ পরিবাররে বন্দী রাখা হইছে ধানমন্ডি ১৮তে একটা বাড়িতে। সেই বাড়ি থেকে আগস্টে পালাইলেন শেখ জামাল মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে। তারপর কড়া প্রহরা। পিপড়াও গলতে পারে না। খাবার বলতে বিস্কুট রুটি, পানি। সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম দিতে হাসিনা যখন হাসপাতালে, বেগম ফজিলাতুন্নেসারেও পাশে থাকতে দেয় নাই তারা। এসবই স্পষ্ট লিপিবদ্ধ আছে বেগম সুফিয়া কামালের একাত্তরের ডায়েরিতে। উঠে আসছে নানা স্মৃতিকথায়।
বেগম জিয়া আটক হন জুনের প্রথম সপ্তাহে। অন্য অনেক অফিসারের স্ত্রীদের মতো তারে রাখা হয় ক্যান্টনমেন্টে। জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দল পাঠাইছেন তারে উদ্ধার করে আনতে, খালেদা জিয়া আসেন নাই। এসব ডকুমেন্টেড। ১৭ ডিসেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয় তারে বাকিদের সঙ্গে। একই দিন মিত্রবাহিনীর মেজর অশোক তারা উদ্ধার করেন শেখ পরিবারকেও। জিয়া ঘরে তুলতে চান নাই খালেদাকে। মুজিব নিজের বাড়িতে রাখছেন তারে, জিয়ারে বলছেন ও আমার মেয়ে। তারপর ঘুষ হিসেবে উপ সেনাপ্রধান নামে একটা পদ সৃষ্টি করে তারে সেনাবাহিনীতে আসীন করছেন। এর মাশুল দিছেন ১৫ আগস্ট, যেই ১৫ আগস্ট তার সেই কথিত মেয়ে খালেদা জন্মদিন পালন কইরা উৎসব করে। ২০১২ সালের দিকে গবাদিরা একটা ছবি ভাইরাল করছিলো, একটা খরচের তালিকার ছবি। পিএম অফিসের নাস্তার খরচ ২ কোটি টাকার উপ্রে হয়, আর খালেদার আমলে তা ছিলো মাত্র ৮০ লাখ। কই যাইতাম। গণভবন থিকা শুরু কইরা প্রধানমন্ত্রীর আওতায় সবটুকু কাভার করে পিএম অফিস। আর খালেদা জিয়ার সময় নাস্তার নামে বিল উঠাইছেই কয়েক কোটি। শুধু তার অফিস না, মইনুল রোডের হিসাব, হাওয়া ভবনের হিসাব- ওইগুলা আমলে কে নিবে? মইনুল রোড ছাড়ার সময় তার বাড়ীতে মদের বোতল পাওয়া গেছে কয়টা? সেগুলা সস্তা না, কেরু কোম্পানীর না।তারপরও খালেদা বাংলাদেশে যাবতীয় ইসলামী আন্দোলনের অদ্বিতীয় নেত্রী। শেখ হাসিনার বাড়িতে ঝান মারলে কয়েকটা জায়নামাজ, তসবী আর জামদানী শাড়ী ছাড়া কি পাইবা? মেকাপ বক্স? একটাও না। অন্যদিকে এক মেকাপবক্স ভুলে দেশে রাইখা গেছিলো বইলা দুইদিন নিউইয়র্কে কোনো কূটনৈতিক বৈঠকে অংশ নেন নাই ম্যাডাম। এতো তাড়াতাড়ি ভুইলা গেলা? ভুইলা গেলা যেখানেই যায়, যেই সভাতেই যায় তার জন্য রাজসিংহাসনের মতো একটা চেয়ার নিয়া যাওয়া হয় বসতে! শেখ হাসিনারে দেখছো এমন করতে কখনও? মাটিতে বইসা শাড়ীর আচলে ঘাম মুছার ভিডিও তো সেদিনই দিলাম! আপার দিন শুরু হয় দুইটা টোস্ট বিস্কুট এক কাপ চা দিয়া। গণভবনে যারা থাকেন তাদের জিগাইয়েন এর নড়চড় হয় কিনা। এখন মহামারীতে লোকসমাগম নাই, কিন্তু প্রতিদিন কয়েকশো দর্শনার্থীর ঝুট ঝামেলা মিটায়া দুপুরে ভাত খাইছেন দুইতিন লোকমা। নিজের রান্না নিজে করেন। লোকজন, দলের নেতাকর্মীরা, সমর্থকরা ভালোবাইসা অনেক কিছুই পাঠায়। সব বিলায়া দেন আশেপাশের সবার মাঝে। এর মধ্যে চাল ডাল, সরিষার তেল এমনকি গাছের আম, পেয়ারাও আছে। এসএসএফ বাদ দিলাম, যেই আনসারটা দূরে ডিউটি করে তার খাবারের দিকেও পিএমের নজর। অফিসাররা যা খায়, সেও তাই পায় ভাগে। স্পেশাল ব্রাঞ্চের যে মহিলা কনস্টেবল প্রেগনেন্ট অবস্থায় অফিস করছেন, আপা নিজ হাতে তার জন্য পুষ্ঠিকর খাবার রান্না করে পাঠাইছেন। এসব মিডিয়ায় আসে না, কারণ এইগুলা খুব সাধারণ ঘটনা, নিয়মিত ঘটে। লোকজনের অভ্যাস হইয়া গেছে। শেখ হাসিনার ফুটানি নাই। বড় হইছেন ওইভাবে। গণভবনে প্রচুর ফলের গাছ। সেগুলা কারো পাড়ার হুকুম নাই, কারণ সেগুলা এলাকার বান্দররা খায়। গণভবনে প্রচুর ইদুর, তাই বিড়াল পালা হয়। দুইটা কুকুরসহ সবার খাবার আসে শেখ হাসিনার বেতন থেকে। উনি বলে দেন এদের খাবার তালিকা। মজার একটা কথা বলি, কোন জিনিসটা কোন বাজারে ভালো এটাও আপা জানেন। তাই কারওয়ান বাজার থেকে কোনটা কিনতে হবে, মোহাম্মদ বাজার থেকে কোনটা আর কোনটার জন্য মালীবাগ যেতে হবে সেটাও উনি বলে দেন। সম্পূরক ট্রিভিয়া। রান্নাঘরের ময়লার ব্যাগটা আপা নিজের হাতে লিফটের গোড়ায় দিয়ে আসেন ফেলতে! এই মানুষটার লগে কোনো ভ্রুহীন সুন্দরীর তুলনা দিলে চান্দি গরম হইয়া যায় বাহে। আমাগো আপা ঘরের মেয়ে, বড় বোনের মতো আপন। তারে ম্যাডাম কইয়া মাথা নিচু কইরা দাড়ায়া থাকতে হয় না, তার সামনে হাত কচলাইতে হয় না, চুপ বেয়াদব কইয়া কাউরে ধমক দেন না কখনও। আটপৌঢ়ে সাদাসিধা যাপনের কতোটাই আর বাইরে আসে! এসব আসলে বলার মতো ঘটনা কিনা জানি না, তবে রাগে দুঃখে বলতে হয়। বললাম। এই শেখ হাসিনা গত ১২ বছর দেশ চালাইছেন, দেশরে কোথা থিকা কোথায় নিয়া গেছেন! বিবেকের কাছে জিগাইয়েন, ঠুলি পরা চোখে তো দেখবেন না কিছু!এই দেশে আর কোনো রাজনীতিবিদ দিবারাত্রি ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নিচে থাকেন না। পান থেকে চুন খসলেই পুটুতে আগুন লেগে যায় সবার। ভাবেন একবার কই থিকা উনি কই আসছেন। তার কি হওয়ার কথা কি হইছেন! সেই সাদাসিধা মানুষটা আজ আগুনমুখী এক লৌহমানবী। শেখ মুজিবের রক্ত চাদর গায়ে এই বাংলাদেশটা দেখভাল করতেছেন। কপাল আপনাগো, না হারাইলে বুঝবেন না…
#জয়_বাংলা #জয়_বঙ্গবন্ধু #শেখ_হাসিনা
© Durbar Bagerhat
Comments