"সোনার বাংলা গড়ার অদম্য স্বপ্নে ক্লান্তিহীন- শেখ তন্ময়"
বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল কিংবদন্তীর এক কাণ্ডারির হাতে, স্বপ্ন দেখার অদম্য সাহসে, আত্মত্যাগের স্ফুলিঙ্গে। হাজার বছরের সেই শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা "বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান" এই জাতির জন্য শুধু একটি স্বাধীন দেশই আনেন নি আমাদের চোখে বুনে দিয়েছিলেন সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে একটি প্রযুক্তিনির্ভর, জ্ঞান ভিত্তিক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ গড়ার সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে তিনি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে থাকেন বিভিন্ন উদ্যোগ। মাত্র তিন বছরেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চমকে দেয় বিশ্বকে। ১৯৭৩ সালে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু। মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং প্রমুখ বিশ্ব নেতাদের পাশে উচ্চারিত হয় বঙ্গবন্ধুর নাম। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে তিনি নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সোনার বাংলা গড়ার সেই স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করতে ষড়যন্ত্রকারীরা জাতির পিতা, তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, এবং সবার ছোট নিষ্পাপ শিশু রাসেলসহ শেখ পরিবারের সবাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর প্রাণপ্রিয় একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরও। প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। দেশ হয়ে ওঠে অরক্ষিত, অনুষ্ঠিত হতে থাকে মৌলিক মানবাধিকার। অবশেষে অনেক বাঁধা পেরিয়ে হয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ্য কন্যা শেখ হাসিনা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এবং দেশের মানুষের ভাগ্য ফেরাতে ছুটে যান কেন্দ্র থেকে প্রান্তে। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের সময় শাসকগোষ্ঠী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বারবার হামলা করে। এর মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিলো ভয়াবহতম। লোমহর্ষক সেই হামলায় তিনি প্রাণে রক্ষা পেলেও আইভি রহমানসহ ২২ নেতাকর্মী নিহত হন এবং ৫ শোর বেশি মানুষ আহত হন। শত বাধা-বিপত্তি এবং হত্যার হুমকিসহ নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ভাত-ভোট এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ে থাকেন অবিচল। ১৯৯৬ এবং ২০০৮ সালে বাংলাদেশের জনগণ দেশকে আলোর পথে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব তুলে দেয় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন "শেখ হাসিনার" হাতে। তার হাত ধরে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় হয়ে ওঠে রোল মডেল। এখন দেশীয় অর্থায়নে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে স্থাপিত তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা আমাদের সামর্থ্যের কথা বলে। এছাড়াও উন্নত বিশ্বের সাথে তথ্য প্রযুক্তিতে একই কাতারে দাঁড়াতে ২০১৮ সালের ১২ মে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। দেশজুড়ে চলছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ শতাধিক মেগা প্রকল্পের কাজ। দেশজুড়ে সকল মানুষ পেয়েছে করোনার টিকা। উন্নয়নের চাকা ঘুরছে দুর্বার গতিতে, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে দ্রুত বাড়ছে জিডিপি। এভাবেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী | নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই যাত্রাকে আরো শক্তিশালী করতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা রাখতে থাকেন অবিস্মরনীয় ভূমিকা। শহীদ শেখ আবু নাসের এর ছেলে শেখ হেলাল উদ্দীন তাদের মধ্যে অন্যতম। এই জনপদের উন্নয়নে তার ঐকান্তিক চেষ্টায় বাগেরহাটে শেখ রাজিয়া নাসের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, খান জাহান আলী বিমানবন্দর, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মংলা সাইলো ও মেরিন একাডেমি গড়ে ওঠে। এরপর বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারুণ্যের সুবাতাস নিয়ে আসেন শেখ হেলাল উদ্দীনের সুযোগ্য পুত্র শেখ তন্ময়। লন্ডন থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করা শেখ তন্ময় চাকুরীর মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করলেও দেশ গড়ার টানে ফিরে আসেন বাংলাদেশে। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ মসজিদের জন্য বিখ্যাত বাগেরহাট-২ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অতঃপর এগিয়ে চলে দেশ গড়ার কাজে তার অক্লান্ত যাত্রা। নির্বাচিত হবার মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে বাগেরহাটবাসীকে বাঁচাতে তিনি করোনার বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন। সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা, সদর হাসপাতালে আইসিইউ সেবা, ভ্যাকসিন প্রদানে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, করোনার সময়ে প্রায় ২০০০ প্রসূতি মায়েদের খাদ্য সহায়তা প্রদান, হটলাইনে ফোনকলের মাধ্যমে রোগীর বাড়িতে ডাক্তার পৌঁছানো, ১১৭টি সিলিন্ডার এবং ১৫০ জন কর্মী নিয়ে ৯টি উপজেলার ৭৫টি গ্রামে করোনায় আক্রান্ত ১০০০ রোগীকে বাড়িতে গিয়ে জরুরি অক্সিজেন সেবা দিতে অক্সিজেন ব্যাংক তৈরি এবং ভ্রাম্যমাণ করোনাভাইরাস স্যাম্পল সংগ্রহ এবং এলাকাবাসীর জন্য স্যানিটাইজার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিতকরণ ছিল করোনার বিরুদ্ধে তার অনন্য অর্জন। এছাড়াও পৌর কবরস্থান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থান আধুনিকায়ন, ৭ মার্চ চত্বর উদ্বোধন, বাগেরহাট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, শেখ কামাল আইটি পার্ক ও ইনকিউবেশন সেন্টার, এবং শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম স্থাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্যোগ গ্রহণ সম্ভব হয়েছে তারই জন্য। বাগেরহাটের শিক্ষাক্ষেত্রেও তার অবদান অনস্বীকার্য। প্রাথমিক শিক্ষায় ৪০টি ভবন, ৪৫টি ওয়াশ ব্লক, ও ১৭টি সীমানা প্রাচীর, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সিলিং ফ্যান বিতরণ এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১০টি নতুন ভবন স্থাপনসহ ১২টি ভবনের উর্ধমূখী সম্প্রসারণে তার অবদান অনস্বীকার্য। বাগেরহাটবাসীর এই প্রাণের নেতা দূর থেকে নয়, জনগণের কথা শোনেন তাদের একজন হয়ে। তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণই শক্তি। আর এই বিশ্বাসকে পুঁজি করেই তিনি ছুটে চলেছেন বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে, সোনার বাংলা গড়ার অদম্য স্বপ্নে ক্লান্তিহীন।
Comments