পঙ্গুত্বের কাছে হার মানেনি সুমাইয়া
পঙ্গুত্বের কাছে হার মানেনি সুমাইয়া !
অটুট মনোবল আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুমাইয়া।
by Durbar Bagerhat on July 04
জন্ম থেকে দুই পা নেই। তাতে কি হয়েছে, অটুট মনোবল আর অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কলেজ পড়ুয়া সুমাইয়া। মায়ের কোলে চড়ে স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে অধ্যায়নরত সুমাইয়া স্বপ্ন দেখছেন চাকরী করে হতদরিদ্র বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর। সুমাইয়ার বসতঘর ও সরকারি চাকরীর জন্য সহায়তার দাবি জানিয়েছেন পরিবার ও স্থানীয়রা।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার প্রত্যান্ত কচুবুনিয়া গ্রামের রিপন হাওলাদের মেয়ে সুমাইয়া (২২)। জন্ম থেকে দুই পা না থাকা সুমাইয়ার জীবন সংগ্রামের গল্প হার মানায় সিনেমাকেও। সকালে কলেজে যাওয়ার আগে নিজেকে পরিপাটি করে সাজিয়ে নেয় দুই পা না থাকা সুমাইয়া। এরপর ব্যাগ গুছিয়ে মায়ের কোলে চড়ে সুমাইয়ার যাত্রা কলেজের উদ্দেশ্যে। সাকোঁ ও সড়ক পথে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌছায় কলেজে। মেয়েকে কোলে নিয়ে মা যখন বেঞ্চে বসিয়ে দেয় সহপাঠিদের সাথে তখন খুনসুটিতে মেতে উঠে সুমাইয়া। তবে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে বর্গা চাষি বাবা আজ-অবধি তৈরি করতে পারেননি থাকার মত বাসস্থান। নেই বিদ্যুত সংযোগও। তাই ল্যাম্পের আলোয় চলে সুমাইয়ার পড়াশোনা। কখনো কখনো ক্লাস করার জন্য মায়ের কোলে করে সিড়ি পাড়ি দিয়ে তিন তলা, চার তলায়ও যেতে হয় তাকে। সুমাইয়ার এই চেষ্টা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি অনুপ্রাণিত করে সহপাঠি ও শিক্ষার্থীদের, মুগ্ধ হন শিক্ষকরাও। সুমাইয়ার এখন একটাই প্রত্যাশা পড়া শেষে যেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় তার। নিজেকে অসহায় না ভেবে পড়াশুনার প্রতি তার আগ্রহ বেশি রয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা। দরিদ্র পরিবারের সুমাইয়ার জন্য বসতঘর ও সরকারি চাকরীর দাবি স্থানীয়দের। সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করতে বাবা-মা ত্যাগ করেছেন জীবনের সবকিছু। পড়ালেখার পাশাপাশি ব্যাংকার হতে চায় সুমাইয়া। সুমাইয়ার পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ তাকে অনেকদূর নিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা কলেজ অধ্যক্ষ। প্রতিবন্ধী সুমাইয়া মোরেলগঞ্জ উপজেলার সেলিমাবাদ কলেজের ডিগ্রী শেষ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী।
READ MORE ON OUR WEBSITE
Comments